Wednesday, July 3, 2019

ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী করণীয়

ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী করণীয়ঃ

ধর্ষণের ধারণাঃ
যে ব্যক্তি অতঃপর ব্যতিক্রান্ত ক্ষেত্র ব্যতিরেকে নিম্নোক্ত পাঁচ প্রকার বর্ণনা দিন যে কোন অবস্থায় কোন নারীর সাথে যৌন সহবাস করে সেই ব্যক্তি নারী ধর্ষণ করে বলে গণ্য হবে

প্রথমতঃ তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে 
দ্বিতীয়তঃ তার সম্মতি ব্যতিরেকে।
তৃতীয়তঃ তার সম্মতি ক্রমে, যে ক্ষেত্রে তাকে মৃত্যু বা আঘাতের ভয় দেখিয়ে তার সম্মতি আদায় করা হয়।
চতুর্থতঃ তার সম্মতি ক্রমে যে ক্ষেত্রে লোকে জানে যে সে তার স্বামী নয় এবং সে (নারী) এই বিষয়ে সম্মতি দান করেছে সেও (পুরুষ) এমন লোক যার সাথে সে আইনানুগভাবে বিবাহিত অথবা সে নিজেকে তার সাথে আইনানুগভাবে বিবাহিত বলে বিশ্বাস করে।
পঞ্চমতঃ তার সম্মতি সহকারে বা ব্যতিরেকে যেক্ষেত্রে সে চৌদ্দ বছরের কম বয়স্ক হয়।

(দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা অনুযায়ী)

ধর্ষণ একটি আমলযোগ্য সালিশ অযোগ্য এবং জামিন অযোগ্য অপরাধ। ধর্ষণের ফলে ধর্ষিতার গর্ভে সন্তান জন্ম নিলে যদি তার পিতৃত্ব নির্ণয় করা সম্ভব না হয় সেই ক্ষেত্রে সন্তানের যাবতীয় ভরণপোষণের দায়িত্ব রাস্ট্র গ্রহণ করবে। ধর্ষককে চিহ্নিত করতে পারলে সন্তানের ভরণপোষণ ধর্ষকের কাছ থেকে আদায় করার দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি পরবর্তীকালে কোন সম্পত্তির মালিকানা অর্জন করে তবে তা থেকে রাষ্ট্র সন্তানের ভরণপোষণ আদায় করবে।


ধর্ষণের কারণ
১. ব্যক্তিগত ও অন্যান্য আক্রোশ।
২. শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব।
৩. আইন প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতা।
৪. পিতা মাতার দায়িত্ব হীনতা।
৫. বেকার সমস্যা।
৬. নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন বা গ্রহণ।
৭. অশ্লীল সিনেমা বা ছবি পোস্টার।
৮. ধনীদের ভোগবিলাস।
৯. অর্থনৈতিক কারণ।


ধর্ষণ পরবর্তী করণীয়
১। স্থানীয় বিচার সালিশ না করে সরাসরি আইনের আশ্রয় নেওয়া।
২। ২৪ ঘন্টার মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থানায় গিয়ে প্রাথমিক আলামত সহ এজাহার দায়ের করা।
৩। ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত গোসল ও পরিধেয় বস্ত্র ধৌত না করা।
৪। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ২৪ ঘন্টার মধ্যে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা।
৫। দ্রুত ভালো আইনজীবীর সহায়তা নেওয়া।
৬। নিকটস্থ নারী ও শিশু অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করা।
৭। থানায় এজাহার গ্রহণ না করলে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে মামলা দায়ের করা।
৮। এছাড়া সরকারী জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল করা।


ধর্ষণের শাস্তি:
যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা। কোন কোন ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।


ধর্ষণের পর মানসিক যন্ত্রণা
১.সব সময় অশান্তিতে থাকে।
২। পুলিশের ভয়ে ভীত থাকে।
৩। মেজাজ খিটখিটে থাকে।
৪। সর্বদা দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকে।


ধর্ষণজনিত অপরাধ প্রতিরোধে করণীয়
১। সমাজের মানুষকে বোঝাতে হবে ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রকৃত দায়ী হলো ধর্ষণকারী, ধর্ষিতা নয়।
২। পুলিশের তদন্ত কাজে সত্য উদঘাটনে সহযোগিতা করা।
৩। পুলিশকে সততা ও নিষ্ঠার কাজে উদ্বুদ্ধ করা।
৪। ধর্ষণের শাস্তি সম্পর্কে প্রচার ও সভার মাধ্যমে সচেতন করা।
৫। অশ্লীল সিনেমা ছবি, পোস্ট দেখা ও প্রদর্শন বন্ধ করা।


ধর্ষণের প্রভাব ও ফল
১। সমাজের গ্রহণযোগ্যতা হারায়।
২। বিয়েতে সমস্যা হয়।
৩। আত্মহত্যা বৃদ্ধি পায়।
৪। পরবর্তী সময়ে বাধ্য হয়ে কখনো কখনো অসামাজিক পথে অগ্রসর হয়।
৫। অর্থনৈতিক কাজে কেউ সম্পৃক্ত করতে চায় না।
৬। সমাজে ঘৃণার পাত্র হয়ে বেঁচে থাকতে হয়।
৭। কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করতে পারে না।
৮।অবৈধ সন্তান জন্ম হতে পারে।
৯। মানসিক ভারসাম্য হারাতে পারে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: