Friday, November 16, 2018

রপ্তানি ক্ষেত্রে গৃহপালিত পশুর গুরুত্ব ও ওমাসম কি

গৃহ পালিত পশু
আনোয়ার হোসেন মন্ডলঃ
গৃহ পালিত পশু উৎপাদনের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিতকরণ করে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠা করা যায়। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের এর একটি বড় হচ্ছে পরিণত হয়েছে।

সাম্প্রতিককালে চামড়াজাত দ্রব্যাদি যেমন জুতা সুটকেস ব্যাগ ইত্যাদি বাইরের দেশ বিদেশ বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপীয় মার্কেটে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। 

কাঁচা চামড়া থেকে প্রক্রিয়াজাত ও পণ্যবাহী চামড়ার দাম অত্যন্ত বেশি। প্রতি বছর ঈদুল আযহায় প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার কাঁচা চামড়া পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণ চামড়ার একটি বড় অংশ প্রক্রিয়াজাত করে চামড়া শিল্পে কাজে লাগানো হয়।
আরো পড়ুনঃ 

  • হাড়ের উপর ভিত্তি করে বোন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে ইহার হাঁস-মুরগি বিভিন্ন পশু পাখির খাদ্য এবং সার হিসেবে ব্যবহৃত হয় প্রক্রিয়াজাত হার বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
  • মাংস প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজিং করে হালাল মাংস নাম দিয়ে বাইরের দেশ বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রপ্তানি করা হচ্ছে দেশেও এ ধরনের মাংসের চাহিদা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
  • দুধ ও দুধজাত পণ্য যেমন মিষ্টি দই ইত্যাদির একটি বড় বাজার বাইরের দেশে গড়ে উঠেছে আর এর উপর ভিত্তি করে রপ্তানি আয়ের এর নতুন দিগন্ত খুলে গেছে।
গরু-মহিষের নাড়িভুঁড়িও (ওমাসম) এখন রপ্তানিপণ্য। অপ্রচলিত এ পণ্যের রপ্তানি দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর ১৫০-২০০ কোটি টাকার সমমূল্যের ওমাসম বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এসব পণ্যের সিংহভাগই রপ্তানি হচ্ছে প্রধানত চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে।
ওমাসম

কোরবানির সময় সংগ্রহ করা হয় বছরের মোট চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ।চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মাসে ১৫টি কনটেইনার ওমাসম রপ্তানি হয় এবং একেকটি কনটেইনারে ৬০ থেকে ৭০ হাজার পিস ওমাসম থাকে। ইংরেজিতে এই নাড়িভুঁড়ির নাম ‘ওমাসম’, যা পশুর তৃতীয় পাকস্থলী নামেও পরিচিত। একসময় উচ্ছিষ্ট হিসেবে তা খাল-নালা ও ডোবায় ফেলে দেওয়া হতো।

এক টন (এক হাজার কেজি) প্রক্রিয়াজাত করার পর ৭০০ কেজি ওমাসম পাওয়া যায় বলে জানান দেশের অন্যতম ওমাসম রপ্তানিকারক বিএমসি ফুড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী বাবুল মজুমদার। তিনি বলেন, বিপুল পরিমাণ ওমাসম রপ্তানির বাজার রয়েছে বহির্বিশ্বে। একটু সচেতন হলেই সেই বাজারটা ধরা সম্ভব। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও পরিবেশদূষণ রোধ—দুই দিক থেকেই লাভ হবে।

ওমাসম দিয়ে উন্নত মানের স্যুপ ও সালাদ তৈরি হয় এবং তা চীনাদের কাছে বেশ জনপ্রিয় খাবার বলে জানান দ্য কনফারেন্স ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী ইয়াসিনুল ইসলাম আরাফাত।ইউরোপেও ওমাসম রপ্তানির চেষ্টা চলছে।
ওমাসম এর সালাদ


দেশের ওমাসম রপ্তানিকারকদের বেশির ভাগই চট্টগ্রাম অঞ্চলের। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে স্কাই নেট সি ফুডস কোম্পানি, কনফারেন্স ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, ক্যামরিজ সি ফুড ইন্টারন্যাশনাল, আরএসএম ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, স্ট্যান্ডার্ড অ্যালাইড ফুড ইন্টারন্যাশনাল, জিআর এক্সপো ইন্টারন্যাশনাল, ভিভিড এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ইত্যাদি।

অপ্রচলিত পণ্য শ্রেণিতে ওমাসম রপ্তানিতে বর্তমানে ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হয়।রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্র জানায়, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১১৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা মূল্যের ওমাসম রপ্তানি হয়। অবশ্য ওমাসম রপ্তানি সমিতির দাবি হচ্ছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা ১৫০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরে তা আরও বাড়বে। বিশ্বে ৩২ হাজার কোটি টাকার ওমাসমের বাজার রয়েছে বলে সমিতির কাছে তথ্য রয়েছে।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: