Wednesday, October 2, 2019

উন্নত প্রযুক্তিতে টমেটো চাষ পদ্বতি

টমেটো একটি পুষ্টিকর সবজি । এটি শীত ও গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমেই চাষ করা যায়।

টমেটোর পুষ্টিমান:- (প্রতি ১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য টমেটো)

ক্যালরী- ২০ কিলোক্যালরী
শ্বেতসার- ৩.৫ গ্রাম
আমিষ- ০.৯ গ্রাম
রাইবোফ্ল্যাভিন- ০.০৩ গ্রাম
ভিটামিন এ- ২০০-৮০০ আন্তঃ একক
থায়ামিন- ০.০৫ মিলিগ্রাম
নায়াসিন- ০.০৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি- ১০-১০০ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম- ৮ মিলিগ্রাম
আয়রন- ০.০৩ মিলিগ্রাম

টমেটো চাষের মাটি ও জমি তৈরিঃ

দোআঁশ মাটি টমেটো চাষের জন্য উত্তম। জমি ৪-৫ বার বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে নিতে হবে।এক মিটার প্রস্হ দুই বেডের মাঝখানে ৩০ সে.মি. নালা রাখতে হয়। বিঘা প্রতি ২০-২৫ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়।

টমেটো গাছের চার রোপণ দূরত্বঃ

প্রতি বেডে ৬০*৪০ সেমি দূরত্বে চারা রোপণ করতে হয়।

টমেটো চাষে সারের পরিমাণঃ (বিঘাপ্রতি)

ইউরিয়া- ৭০-৮০ কেজি
টিএসপি- ৬০-৭০ কেজি
এমপি- ৩০-৪০ কেজি
গোবর- ২.০-২.৫ টন

[বি.দ্র: ১ বিঘা= ৩৩.৩ শতাংশ]

টমেটো চাষে সার প্রয়োগ পদ্বতিঃ

অর্ধেক গোবর ও টিএসপি সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে দিতে হয়। অবীশষ্ট গোবর চারা লাগানোর পূর্বে গর্তে প্রয়োগ করতে হয়।ইউরিয়া  িএমপি দুই কিস্তিতে চারা লাগানোর ৩য় ও ৫ম সপ্তাহে রিং পদ্বতিতে (গাছের গোড়ার চারদিকে) প্রয়োগ করতে হয়।

টমেটোর অন্তবর্তীকালীন পরিচর্যাঃ

প্রথম ও ২য় কিস্তিতে সার প্রয়োগের পূর্বে পার্শ্বকুশিসহ মরা পাতা ছাঁটাই করে দিতে হয়। এতে রোগ ও পোকার আক্রমণ
কম হয় ।ফলের আকার ও বড় হয় । গাছকে নুয়ে পড়া ও ফলকে পঁচনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য  /\  আকৃতির ঠেকনা দেওয়ার জন্য বাঁশ বা ধৈঞ্চার খুঁটি দেয়া যেতে পারে ।

গ্রীষ্ম ও বর্ষায় টমেটো চাষ পদ্বতিঃ

গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে টমেটো চাষ করার জন্য নিচের জাতসমূহ অনুমোদন করা হয়েছে।

বারি টমেটো-৪,
বারি টমেটো-৫,
বারি টমেটো-৬,
বারি টমেটো-১০,
বারি টমেটো-১১,
বারি টমেটো-১৩

পলিথিনের ছাউনিতে এসব জাতের আবাদ করতে হয়। ২৩০ সেমি চওড়া ২ টি বেডে লম্বালম্বি ভাবে একটি করে ছাউনীর ব্যবস্হা করা যেতে পারে।এ ক্ষেত্রে ছাউনীর খুটির উচ্চতা ১৫০ সেমি ও মাঝখানের উচ্চতা ২১০ সেমি হয়ে থাকে।একটি ছাউনি ২০*২.৩ মিটার আকারের হয়। চারা লাগানোর পূর্বেই নৌকার ছইয়ের আকৃতি করে ছাউনী দিতে হয় । ছাউনীর জন্য স্বচ্চ পলিথীন নাইলনের দড়ি ও পাটের সুতলী প্রয়োজন।পলিথিন যেন বাতাসে উড়ে না যায় সেজন্য ছাউনীর উপর দিয়ে উভয় পার্শ্ব দিয়ে আড়াআড়ি ভাবে দড়ি পেচানো থাকে।পাশাপাশি দুই ছাউনীর মাঝে ৭৫ সেমি চওড়া নালা রাখতে হবে, যেন ছাউনী থেকে নির্গত বৃষ্টি নালা দিয়ে নিষ্কাশিত হয়ে যায়।প্রতি ছাউনীতে ২ টি বেড থাকবে । জমি থেকে বেডের উচ্চতা ২০-২৫ সেমি হবে।২ টি বেডের মাঝখানে ৩০ সেমি নালা রাখতে হবে।প্রতিটি ছাউনীতে ৪ টি সারি থাকবে।২৫-৩০ দিন বয়সের চারা প্রতি বেডে ২ সারি করে রোপণ করতে হবে।গ্রীষ্মকালীণ টমেটো গাছে প্রচুর ফুল ধরলেও উচ্চ তাপমাত্রা ও অতিবৃষ্টি পরাগায়নে বিঘ্ন ঘটায়।কাজেই আশানুরুপ ফলন পেতে হলে ‘টমাটোটোন’ নামক কৃত্তিম হরমোন ২০ মিলি ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে সিঞ্চন যন্ত্রের সাহায্যে সপ্তাহে ২ বার সদ্য ফু্টা ফুলে স্প্রে করতে হয় । 

সেচ ও নিষ্কাশন ঃ

চারা রোপণের ৩-৪ দিন পর হালকা সেচ ও পরবর্তী প্রতি কিস্তি সার প্রয়োগের পর হালকা সেচ দিতে হয় । গ্রীষ্ম মৌসুমে টমেটো চাষের জন্য ২-৩ দিন পর পর সেচের প্রয়োজন হয় । টমেটো গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না ।সেচ অথবা বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্হা থাকতে হবে।

পোকামাড় ও রোগবালাইঃ

সাদা মাছি ও সুড়ঙ্গ পোকার আক্রমণ দেখা দিলে ডায়াজিনন ১মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করে দমন করা যায়। ড্যাম্পিং অফ ও আশুধ্বসা রোগের জন্য রিডোমিল ২ গ্রাম/লিটার ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায় ।

শেয়ার করুন

Author:

Etiam at libero iaculis, mollis justo non, blandit augue. Vestibulum sit amet sodales est, a lacinia ex. Suspendisse vel enim sagittis, volutpat sem eget, condimentum sem.

0 coment rios: